আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাদের সুস্থতা। প্রতিনিয়ত কাজ গুলো কেমন হবে তা নির্ভর করে আপনার সুস্থতার উপর। শরীর সুস্থ থাকলে মন ভালো থাকে। কাজের প্রতি মন বসে। কাজের প্রতি আগ্রহ জাগে এবং অন্য কাজ করতে ভালো লাগে। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় মন বসে। সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনি সেরা ১০টি হেলথ টিপস অনুসরণ করতে পারেন।
শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায়
সুস্বাস্থ্যের জন্য সেরা ১০টি হেলথ টিপস
শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিনিয়ত আমাদের কিছু হেলথ টিপস মেনে চলতে হবে। আসুন জেনে নেই তেমনি কিছু হেলথ টিপস-
১. নামাজ পড়া: নামাজের মাধ্যমে আমাদের শরীর যে পরিমান সুস্থতা আসে অন্য কোনো কাজের দ্বারা কিংবা খাবারের দ্বারা আসে না। নামাজ পড়লে মন ভালো থাকে। মন প্রফুল্ল থাকে। ৫ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের জীবনে একটি সুন্দর রুটিন এনে দেয়। এতে করে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠার উপকারিতা, ব্যায়াম, সেজদার মাধ্যমে মাথায় রক্তের চলাচল, সময়ের কাজ সময়ে করাসহ অনেক উপকার পেয়ে থাকি।
২. পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ: একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের শরীরে প্রায় ৬০% পানি থাকে এবং একজন নবজাতকের শরীরে প্রায় ৭৫% পানি থাকে। শরীর সুস্থ রাখতে প্রায় ৬-৭ লিটার পানি পান করা উচিত। এতে করে প্রসাবের মাধ্যমে শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়।
৩. শাক-সবজি খাওয়া: ভিটামিন ও মিনারেলস আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজন । ভিটামিন ও মিনারেলস আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং আমাদের শরীরকে খাদ্যের শর্করা, আমিষ ও চর্বির ব্যবহারে সাহায্য করে।
৪. ভিটামিন সি গ্রহণ: একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রাম ও একজন পুরুষের দৈনিক ৯০ মিলিগ্রামের মতো ভিটামিন ‘সি’ দরকার। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, কোলাজেন কলার নমনীয়তা রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
৫. ভিটামিন এ : ভিটামিন এ মানব শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলার শরীরে ভিটামিন ‘এ’ দিনে ৭০০ মাইক্রোগ্রাম থাকা উচিত। পূর্ণবয়স্ক পুরুষদের শরীরে দিনে ৯০০ মাইক্রোগ্রাম থাকা উচিত। ভিটামিন এ এর উল্লেখযোগ্য উৎসগুলো হল: কলিজা, দুগ্ধজাত পণ্য, সবুজ এবং হলুদ শাকসবজি, আম ইত্যাদি।
৬. ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে অ্যাপল গ্রহণ: আপেল অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে। যে খাদ্য/পুষ্টির অংশ হিসেবে ফাইবার-সমৃদ্ধ আপেল অন্তর্ভুক্ত করলে তা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৭. ব্যায়াম করা: হৃদ্ররোগ, সংবহন তন্ত্রের জটিলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা রোধে শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও মানসিক অবসাদগ্রস্ততা দূর করতে, ইতিবাচক আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে, সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়, ব্যক্তির যৌন আবেদন বৃদ্ধি শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮. দাঁতের যত্ন নেওয়া: প্রতিদিন রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে দাঁত ব্রাশ করতে হবে এবং সকালে খাওয়ার পরে। অথবা রাত্রে দাঁত ব্রাশ করার পরে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে মেসওয়াক করা। যা দাঁতকে প্রাকৃতিক ভাবে অনেকটাই সুস্থ রাখে যা সাধারণত ব্রাশ এর মাধ্যমে পাওয়া যায় না। মেসওয়াক করার উপকারী-১. মেসওয়াক করলে আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্টি হন ২. নামাযের সওয়াব সাতাত্তর গুণ বৃদ্ধি পায়। ৩. স্বচ্ছলতা আসে। ৪. মুখ সুঘ্রাণ হয় ৫. দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। ৬. মাথা ব্যথা সেরে যায়। ৭. চোয়ালের ব্যথা দূর হয়। ৮. ফেরেশতাগণ মোসাফাহা করেন। ৯. চেহারা উজ্জ্বল হয়। ১০. দাঁত উজ্জ্বল হয়।
৯. বাইরের ফাস্টফুড: বার্গার, স্যান্ডউইচ, পেস্ট্রি, কেক, বিস্কুট, শিঙাড়া, সমুচাসহ খিদে মেটালেও এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত বাইরের ফাস্টফুডে ওজন বাড়ার সমস্যা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, পেটের সমস্যাসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরির প্রধান কারণ ফাস্টফুড ও কোমল পানীয়তে আসক্তি।ফাস্টফুড অসম্পৃক্ত চর্বি বা ট্রান্স ফ্যাটসমৃদ্ধ। এ ধরনের চর্বি রক্তে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিয়ে ধমনিতে ব্লক সৃষ্টি করে। পাশাপাশি উচ্চমাত্রার লবণ, টেস্টিং সল্ট বা ও কৃত্রিম রং থাকায় ফাস্টফুড উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে। সমান ঝুঁকি থাকে ডুবো তেলে ভাজা ফাস্টফুডেও। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
১০. প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুধ খাওয়া: দুধ ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের উৎস। দুধে আছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ওমেগা থ্রি, ওমেগা ৬ সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস করে লো-ফ্যাট দুধ খেলে শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল অনেকটাই কমে এবং শরীর সুস্থ থাকে। ঘুম ভালো হয়। হাড় মজবুত করে। ত্বক সুন্দর করে।
এছাড়াও আরো অনেক দিক রয়েছে যার মাধ্যমে শরীর সুস্থ থাকে। যেমন- কালোজিরা, মধু, বাদাম খাওয়া, রাত্রে তাড়াতাড়ি ঘুমানো, সর্বদা হাসি খুশি থাকা, ভালো মানুষের সাথে থাকা এবং ইতিবাচক চিন্তা করা ইত্যাদি বিষয় আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।