Skip to content

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন নেওয়ার বিস্তারিত নিয়ম কানুন

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন, বাড়ি তৈরির করার জন্য দেয়া হয়। মানুষের জীবনে স্বপ্ন দেখার মধ্যে অন্যতম স্বপ্ন হলো একটি সুন্দর বাড়ি করা। নিজের একটি বাড়ি থাকা মানে নিজের এবং পরিবার বাসস্থান নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা থাকে না। তাই, বাড়ি হওয়া চাই প্রতিটি মানুষের স্বপ্নের কল্পনার প্রতিচ্ছবি।

বর্তমানে দেশের আর্থসামাজিক খাতে এবং অর্থনীতি বিবেচনা করলে উচ্চবিত্ত শ্রেণী পেশার মানুষদের কাছে বাড়ি তৈরি কোনো ব্যাপার না হলেও, সমস্যা হয় মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্মবিত্ত মানুষের বাড়ি তৈরির স্বপ্ন পূরণের ব্যাপারে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন

একটি বাড়ির দ্বারা ফুটে উঠে একজন ব্যক্তির রুচি-বোধের পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ। তাই নিজের রুচি-বোধের সংমিশ্রণ ফুটিয়ে তুলতে সকলে একটি বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখে থাকে। তবে তা সবার দ্বারা নিজের উপার্জিত অর্থের দ্বারা করা হয়ে উঠে না। পরিবারের খরচ, বৃদ্ধ পিতামাতার খরচ, নিজের খরচ সব কিছু সামলে বাড়ি করা কষ্টসাধ্য।

তাই ইসলামী ব্যাংক সেসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই একটি ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে যেহেতু এটি একটি ইসলামী ব্যাংক তারা আপনাকে সরাসরি টাকা দিবে না অর্থাৎ তারা বিনিয়োগ করবে। প্রচলিত ব্যাংকের লোন পদ্ধতি ইসলামে জায়েজ নাই। অর্থাৎ এটি হারাম বা নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক লোনের ইন্টারেস্ট রেট কত?

সাধারণভাবে ১৬% রকম হতে পারে এবং আপনি এই লোন তিন বছরের মধ্যে পর ইসলামী ব্যাংক লোনের ইন্টারেস্ট রেট সাধারণভাবে ১৬% এর মধ্যে পরিবর্তন করতে পারে, এবং এটি ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়িক লোন এর প্রকার এবং লোনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। বাড়ি নির্মাণ লোনের জন্য সাধারণভাবে ১৬% রেট প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি ব্যক্তিগত অথবা ব্যবসায়িক লোনের প্রকার এবং ঋণের পরিমাণ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দিবে?

এলাকাভেদে ঋণের পরিমাণ ভিন্নতা হতে পারে। যেমন:মহানগর শহরের জন্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

জেলা শহরগুলোতে প্রায় দেড় কোটি টাকা এবং অন্যান্য সাধারণ অঞ্চলের জন্য প্রায় 30 লক্ষ টাকা এই পদ্ধতিতে ঋণ নিতে পারেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাক্তন অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ঋণ পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে এবং ব্যাংকের নির্দিষ্ট শর্তাদি সাপেক্ষে ঋণ অ্যাপ্লাই করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি

বাড়ি করার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে যেটা হয়, তা হল আপনি সরাসরি ব্যাংক থেকে টাকা নিতে পারবেন না, অর্থাৎ বাড়ি করার জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন- রড,সিমেন্ট বালি ইত্যাদি আপনি ক্রয় করতে পারবেন না, এগুলো ব্যাংক করবে। ব্যাংকের সাথে আপনার শুধু চুক্তি সম্পাদন করতে হইবে। কেননা ব্যাংক এখানে ইনভেস্ট করছে আপনার বাড়ি নির্মাণ করার জন্য।

তবে, এই ক্ষেত্রে কিছু জিনিস বিবেচ্য রয়েছে।

  • আপনি যদি নতুন বাড়ি নির্মাণ করেন, সেই ক্ষেত্রে তারা আপনাকে ৬০% ঋণ সুবিধা প্রদান করবে।
  • আপনি যদি রেডিমেড ফ্লাট কিংবা এপার্টমেন্ট ক্রয় করতে চান সেই ক্ষেত্রে, তারা আপনাকে ৫০% ঋণ সুবিধা প্রদান করবে।
  • আপনি যদি পুরানো বাড়িকে পুনঃ নির্মাণ করতে চান সেই ক্ষেত্রে তারা ৬০% ঋণ সুবিধা প্রদান করবে।
  • ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের জন্য উক্ত ঋণ সুবিধা প্রদান করবেন।
  • সাধারণ সর্বোচ্চ ৬৫ বছরের মধ্যে যেকোনো পেশাজীবী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী কিংবা জমির মালিক এই ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পাওয়ার শর্তসমূহ

১. আয়ের উৎস
তারা আয়ের উৎস যাচাই করবে যে, আপনি লোণ পরিশোধ করার সামর্থ্য রাখেন কিনা। তবেই, তারা আপনাকে ইসলামী ব্যাংক হাউজ লোন প্রদান করে থাকবে।

২. পূর্বে কোথাও ঋণ ছিল কিনা
যেকোনো ক্ষেত্রে ব্যাংক সমূহ চাইবে, আপনি তাদের ভবিষ্যতে ঋনের টাকা পূরণের সর্বোচ্চ সামর্থ্য রাখেন কিনা। কিন্তু যদি আপনি আগে থেকে ঋণে জর্জরিত থাকেন, সেই ক্ষেত্রে আপনার হোম লোণ পাওয়ার সম্ভাবনা একদম ক্ষীণ হয়ে যায়।

৩. বয়স
হোম লোণের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে, ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর থেকে ৩৫ বছর হলো ভালো হয়। কারণ বয়স বৃদ্ধি হলে আপনার আয়ের উৎস যদি না থাকে, তখন আপনাকে ঋণ টাকা পরিষদের ক্ষেত্রে খানিকটা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

৪. আপনার পূর্বের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা
হোম লোণের জন্য ব্যাংকে আবেদন করার পূর্বে তারা আপনার পূর্বে যেকোনো ব্যাংকে লেনদেন অভিজ্ঞতা সন্ধান করবে ।

৫. আপনার বর্তমান কর্মস্থল
ব্যাংক হোম লোণ প্রদানের ক্ষেত্রে আপনার কর্মস্থল সম্পর্কে, আপনার সম্পর্কে, সেই সাথে আপনার কর্মস্থলে আপনার সম্পর্কে ব্যাংক সমূহ পূর্ণাঙ্গ যাচাই বাছাই করে নিবে। আপনি মানুষ হিসাবে কেমন, কারো সাথে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে কিনা, এইসব বিষয়ও যাচাই করবে।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন

ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম লোনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রাইভেট প্লেটের ক্ষেত্রে

  • জমির মূল মালিকানা দলিল, বায়া দলিল।
  • CS, SA, RS, BS খতিয়ানের জাবেদা নকল।
  • DCR, খাজনা রশিদ ও নামজারী খতিয়ান।
  • জেলা/সাব রেজিষ্ট্রি অফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত ১২ (বার) বছরের NEC।

সরকারী প্লটের ক্ষেত্রে

  • প্লটের বরাদ্দ কাগজ।
  • দখল হস্তান্তর কাগজ।
  • মূল লীজ দলিল ও বায়া দলিল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • লীজ দাতা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে বন্ধক অনুমতি পত্র।
  • হস্তান্তর অনুমতিপ্রত ও নামজারী, ডিসিআর ও খাজনা রশিদ।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন আবেদন করতে যা যা করা লাগবে

  • ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগ ইন করুন বা আপনার নিকটবর্তী শাখার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
  • হোম লোনের আবেদন ফর্মটি ডাউনলোড করুন বা অনলাইনে পূরণ করুন। ফর্মে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, আয়ের বিবরণ, ঋণের পরিমাণ, সম্পদের বিবরণ, গ্যারান্টরের তথ্য (যদি প্রয়োজন হয়) ইত্যাদি প্রদান করুন।
  • আবেদন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করার পর, সেই ফর্মটি অফিসে সাবমিট করুন বা অনলাইনে যেখানে সাবমিট করতে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
  • ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার অ্যাপ্লিকেশন পর্যালোচনা করবে এবং আবেদন মান্য হলে ঋণ অনুমোদন দেওয়ার জন্য সম্পর্ক করবে।
  • ঋণ অনুমোদনের পর, আপনাকে লোনের সময়সীমা, মাসিক পরিশোধের পরিমাণ, সুদের হার, শর্তাবলী ইত্যাদি সম্পর্কে জানানো হবে।

আরও পড়ুন: পূবালী ব্যাংক লোন সমূহ ২০২৩ | পার্সোনাল লোন | হোম লোন

এই ছিল ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম লোন নেওয়ার বিস্তারিত। আশা করি অপনারা বুজতে পারছেন। তবে অব্যশই লোন নেওয়ার আগে চিন্তা করে নিবেন যাতে পরবর্তীতে সমস্যায় না পড়তে হয়।

2 thoughts on “ইসলামী ব্যাংক হোম লোন নেওয়ার বিস্তারিত নিয়ম কানুন”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *