Skip to content

শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায় এবং আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের উপায়

শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায় এবং আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের উপায় আমাদের জানা আবশ্যক। কেননা শিশুদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ দেখে আমাদের রোগ সনাক্ত করতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ৩০ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ১৩৮ জন মানুষ। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২৪৬ জন। জানুয়ারী থেকে গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৭১ শিশু ভর্তি হয়েছে।

ডেঙ্গু হলো একটি মশা পরিবাহিত রোগ যা এডিস মশার কামড়ে হয়ে থাকে। তাই অবহেলা না করে ডেঙ্গু থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে যথেষ্ট সচেতন রাখুন। আসুন জেনে নেই শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার উপায় এবং আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের উপায়।

শিশুদের ডেঙ্গু কিভাবে সনাক্ত করবেন-

সাধারণত এডিস মশা কামড় দেওয়ার পর সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পরে এবং ১০ দিনের মধ্যে নানা উপসর্গ দেখা যায়

১. যেহেতু এটি ভাইরাস জনিত রোগ তাই জ্বরের তাপমাত্রা ১০১,১০২ ও ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে। তবে ১০০ এর নিচে হলেও ডেঙ্গু থাকতে পারে।

২. শিশুদের স্বাবাবিক চঞ্চলতা থাকে না। আগের মতো খেলাধুলা করে না এবং কান্নাকাটি করে.

৩. কিছুই খেতে চায় না। বমি বমি ভাব দেখা যায় বা কিছু খেলে বমি করে দিতে চায়।

৪. ৬-৮ ঘন্টা প্রসাব না হওয়া

৫. শরীরে লালচে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে

৬. মাথা ব্যাথা এবং পানি শূন্যতা ও পাতলা পায়খানা হতে পারে.

শিশুদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের উপায়

যদি ডেঙ্গু ধরা পরে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি পরিস্থিতি ভালো থাকে তাহলে বাড়িতে রেখে যত্নের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

শিশুদের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণ দেখা দিলে সিবিসি পরীক্ষা করতে হবে। যদি ডেঙ্গু সনাক্ত হয় তাহলে প্রতিদিন সিবিসি পরীক্ষার মাধ্যমে পরিস্থিতি ভালো না খারাপ দেখতে হবে। প্রাথমিক ভাবে নিচের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

১. যদি জ্বর থাকে তাহলে স্পঞ্জ দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে.

২. শিশুকে মায়ের বুকের দুধ ও পানি খাওয়াতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে , মায়ের বুকের দুধ নবজাতকের জন্য আদর্শ পুষ্টিকর খাবার। এতে সংক্রামক ব্যাধির আক্রমণ অনেক কমে যায়। মাতৃদুগ্ধ পানকারী শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে পরিপূর্ণভাবে। মায়ের দুধে প্রায় ২০০ উপাদান রয়েছে, যার প্রতিটি উপাদানই শিশুর জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়, যা অন্য কোনো ফর্মুলা দুধে নেই।

৩. তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে.

৪. খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের শরবত, স্যুপ ইত্যাদি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

রোগীর অবস্থা বুজে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে হবে

ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে কয়েকটি উপায় গ্রহণ করুন —
১. মশার প্রজনন বা উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা
২. মশারি
৩. মশা নিধারক ব্যবহার করা
৪. সুররক্ষামূলক পোশাক

আসুন কিভাবে এই কাজগুলো করবো জেনে নেই –
১. মশার প্রজনন বা উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা– এডিস মশা সাধারণত পানিতে বংশবৃদ্ধি করে। তাই আপনার বাসার কোথাও পানি জমে আছে কিনা খেয়াল রাখুন। বেশিদিন পানি জমিয়ে রাখবেন না. ৩ দিন পর পানির বোতল ,ফুলের টব, পুরানো কোনো কিছুতে যেন পানি জমে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন। বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার নিশ্চিত করুন।

২. মশারি– রাত্রে কিংবা দিনে গুমানোর পূর্বে অব্যশই মশারি টানিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখুন যেন কোনো ভাবেই মশা শিশুদের মশারির মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে। মশারির ছিদ্র আছে কিনা সে দিকে খেয়াল রাখুন।

৩. মশা নিধারক ব্যবহার করা – ঢাকাতে প্রায় নিয়মিত ফগিং বা ধোয়া ছড়ানো দেখা যায়। তাই আপনার বাসা কিংবা পার্শবর্তী এলাকা গুলোতে নিশ্চিত করুন। এছাড়াও স্প্রে ব্যবহার করুন। তবে এগুলো ব্যবহারের সময় শিশুর বয়স ও শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট লক্ষ্য রাখুন। প্রতিরোধক কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে থাকা নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ুন এবং গায়ে থাকা তারিখ অব্যশই দেখে কিনুন।

৪. সুররক্ষামূলক পোশাক– শিশুদের কিংবা বাসার সকলের সম্পর্ণ গা ঢাকা পোশাক নিশ্চিত করুন। যাতে করে মশা কামড়াতে না পারে। এক্ষেত্রে ফুল প্যান্ট, ফুল হাত টি শার্ট খুবই উপকারী।

তবে মশা প্রতিরোধ অ্যারোসল, মশার কয়েল বা ফাস্ট কার্ড শিশু থেকে শুরু করে সবার জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে এটি আমরা সকলেই জানি । এর পরিবর্তে মসকুইটো কিলার বাল্ব, ইলেকট্রিক কিলার ল্যাম্প, ইলেকট্রিক কয়েল, মসকুইটো কিলার ব্যাট, মসকুইটো কিলার ট্র্যাপ ইত্যাদির সাহায্যে নিরাপদে মশা ঠেকানো যেতে পারে।

অবহেলা না করে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতন থাকুন এবং আপনার আসে পাশের মানুষকেও সচেতন করুন

আরও জানুন রোটা ভাইরাস সম্পর্কে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *